আদি সঙ্কটমোচন হনুমান মন্দির

সূ্ত্র :  উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ
সঙ্কটমোচন হনুমান মন্দির
সঙ্কটমোচন হনুমান মন্দিরের প্রবেশদ্বার
ধর্ম
অন্তর্ভুক্তিহিন্দুধর্ম
অবস্থান
অবস্থানবারাণসী
রাজ্যউত্তরপ্রদেশ
দেশভারত
স্থাপত্য
ধরনহিন্দু স্থাপত্য

সঙ্কটমোচন হনুমান মন্দির হল ভারতের উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের বারাণসী শহরে অবস্থিত একটি হিন্দু মন্দির। এটি হিন্দু দেবতা হনুমানের মন্দির। অসী নদীর তীরে কাশী হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে এই মন্দিরটি অবস্থিত। মন্দিরের বর্তমান স্থাপত্যটি শিক্ষাবিদ, স্বাধীনতা সংগ্রামী তথা কাশী হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা পণ্ডিত মদনমোহন মালব্যের দ্বারা নির্মিত। হনুমান জয়ন্তী এই মন্দিরের প্রধান উৎসব। এই উৎসব উপলক্ষে দুর্গামন্দিরের নিকটবর্তী দুর্গাকুণ্ড থেকে হনুমান মন্দির পর্যন্ত এক বিশাল শোভাযাত্রা বের হয়


কথিত আছে, এই মন্দিরটি যেখানে নির্মিত হয় সেখানেই তুলসীদাস হনুমানের দর্শন পেয়েছিলেন। বাল্মীকি-রামায়ণের অবধি-সংস্করণ রামচরিতমানস গ্রন্থের রচয়িতা তুলসীদাস এই মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। প্রচলিত লৌকিক বিশ্বাস অনুসারে, এই মন্দির যাঁরা নিয়মিত দর্শন করেন, তারা হনুমানের আশীর্বাদ পান। প্রতি মঙ্গলবার ও শনিবার ভক্তেরা এই মন্দিরে হনুমানের বিশেষ পূজা দিয়ে থাকেন। হিন্দু জ্যোতিষ মতে, হনুমান দুষ্টগ্রহ শনিকে দমন করেন। তাই অনেক হিন্দু শনির দোষ বা অন্যান্য গ্রহদোষ খণ্ডন করার জন্য এই মন্দিরে পূজা দেন।

জঙ্গি হানা

২০০৬ সালের ৭ মার্চ মন্দিরে আরতি চলাকালীন তিনটি বোমা বিস্ফোরণ হয়। এই সময় মন্দিরে অসংখ্য দর্শনার্থী উপস্থিত ছিলেন এবং একটি বিয়ের অনুষ্ঠান চলছিল। বিস্ফোরণের পর উপস্থিত দর্শনার্থীরাই ত্রাণের কাজে এগিয়ে আসে। পরদিন থেকে অবশ্য মন্দিরের দৈনন্দিন পূজার কোনো ব্যাঘাত ঘটেনি।


রাম ও হনুমানের ভক্তেরা এই মন্দিরে নিয়মিত হনুমান চালিসা ও সুন্দরকাণ্ড পাঠ করেন। এই বইদুটি মন্দির থেকে পুস্তিকার আকারে বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়। ২০০৭ সালে জঙ্গি হামলার ঘটনার পর থেকে মন্দিরের মধ্যে স্থায়ী পুলিশ চৌকি বসানো হয়েছে।

সঙ্কটমোচন ফাউন্ডেশন

মন্দিরের মোহন্ত (প্রধান পুরোহিত) বীরচন্দ্র মিশ্র ১৯৮২ সালে সঙ্কটমোচন ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেন। এই ফাউন্ডেশন গঙ্গা নদী পরিষ্কার ও রক্ষার কাজ করে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও সুইডেনের সরকার এই কাজে অর্থসাহায্য করে। বীরচন্দ্র মিশ্র আগে কাশী হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির গণপূর্ত বিভাগের প্রধান ছিলেন এবং রাষ্ট্রসংঘ পরিবেশ কর্মসূচির অন্তর্গত "গ্লোবাল ৫০০ রোল অফ অনার" পুরস্কারে সম্মানিতও হয়েছিলেন। ১৯৯৯ সালে তিনি টাইম ম্যাগাজিনের "হিরো অফ দ্য প্ল্যানেট" সম্মানও পেয়েছিলেন। গত ২৫ বছর ধরে অস্ট্রেলিয়া-ভিত্তিক পরিবেশকর্মীগোষ্ঠী ওজ গ্রিনের সঙ্গে "স্বচ্ছ গঙ্গা অভিযান" নামে এক কর্মসূচি চালাচ্ছে এই ফাউন্ডেশন।

সঙ্কটমোচন সংগীত সমারোহ

প্রতি বছর এপ্রিল মাসে এই মন্দিরে "সঙ্কটমোচন সংগীত সমারোহ" নামে এক ধ্রুপদী সংগীত ও নৃত্যের অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়। এতে সারা ভারত থেকে শিল্পীরা অংশ নিতে আসেন।